রংপুর বিভাগের পেসার মেহদী হাসানের ভবিষ্যতে অনেক গল্প বলার মতো একটি ঘটনা ঘটে গেছে। তবে হয়তো তখনও তাঁর মনে গভীর এক দুঃখ থাকবে। গল্পের শুরুতে তিনি বলতে পারেন, ‘জানো, আজ থেকে অনেক বছর আগে জাতীয় লিগে এক ব্যাটসম্যানের ব্যাট ভেঙে সেটির কানা দিয়ে স্টাম্প ভেঙে দিয়েছিলাম! কিন্তু আমাদের দেশের ক্রিকেট বোর্ড এতটাই অসাবধান যে তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেই ভিডিওটি পোস্ট করে ক্যাপশনে আমার নামের বদলে অন্য একজনের নাম লিখে ফেলেছে!’
তারপরের প্রশ্ন হতে পারে, ‘ভিডিওতে তাহলে তোমাকে কীভাবে সবাই চিনল?’ উত্তর আসতে পারে, কীভাবে আবার? ভিডিওটি ভালো করে দেখে, বোলারের পিঠে লেখা নাম দেখে!
চ্যাম্পিয়ন সিলেটের এক ম্যাচ বাকি রাখতেই আসুন ভবিষ্যতের কল্পনা থেকে বর্তমানের বাস্তবে ফিরে আসি। কক্সবাজারে গতকাল জাতীয় লিগের ষষ্ঠ রাউন্ডের ম্যাচে শেষ দিনে এমন কিছু ঘটনা ঘটেছে। আসলে ঘটনা দুটি, একটি গৌরবের, অন্যটি লজ্জার। প্রথমে গৌরবের ঘটনাটিই বলা যাক।
প্রথম ইনিংসে ১৭৪ রানের লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে গতকাল ব্যাটিংয়ে নেমেছিল ঢাকা মহানগর। ২৫ রানে ৭ উইকেট নেওয়া মেহদীর বোলিংয়ে ঢাকা মেট্রো ১১৮ রানে অলআউট হলেও ম্যাচ হয়েছে ড্র। কিন্তু এই ফল ছাপিয়ে সবার চোখে লেগে থাকতে পারে ঢাকা মহানগরের দ্বিতীয় ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারের প্রথম বলটি। স্ট্রাইকে ছিলেন দলটির উইকেটকিপার তাহজিবুল ইসলাম। রংপুরের পেসার মেহদী তিনটি স্লিপ নিয়ে ক্যাচের আশায় কিছুটা সামনে থেকে বল করেছিলেন। তাহজিবুলও জোর দিয়ে ড্রাইভ খেলেন। কিন্তু বল তাঁর ব্যাটের নীচের অংশে লাগায় ব্যাটের কানা ভেঙে যায়। ঘটনাটি অবশ্যই অবাক করার মতো হলেও ক্রিকেটে এমন ঘটনা নতুন নয়। কিন্তু এরপরই যা ঘটেছে, তা হয়তো নতুন কিংবা বিরল। ভেঙে যাওয়া ব্যাটের সেই কানা গিয়ে লেগেছে স্টাম্পে! বেল পড়ায় হিট উইকেট আউট হন তাহজিবুল। আউট হওয়ার পর ব্যাটের নীচের অংশে তাকিয়ে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে তাহজিবুল কিছুক্ষণ ক্রিজে দাঁড়িয়েছিলেন। এমন ঘটনায় আসলে আর কী করার আছে, কী করা যেতে পারে!
কিছুই না। তবে ম্যাচ ড্র হওয়ার পর গতকাল রাতে সবচেয়ে আশ্চর্যজনক ঘটনাটি ঘটেছে। অবাক করা এই আউটের ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স–এ গতকাল রাত ৮টা ২৫ মিনিটে পোস্ট করা হয় বিসিবির অফিশিয়াল হ্যান্ডল থেকে। সেই ভিডিওর ক্যাপশনে ইংরেজিতে যা লেখা হয়েছে, তার বাংলা মানে হল, ‘দুর্ভাগ্যজনক আউট! খুব নাটকীয়ভাবে রংপুরের পেসার রবিউল তাহজিবুলের উইকেটটি পেয়েছেন!’
১৮১ রান করে ইনিংস ব্যবধানে রাজশাহীকে হারিয়েছে ঢাকা বিভাগরবিউল? হ্যাঁ, রবিউল রংপুরের হয়েই খেলছেন। কিন্তু ঢাকা মহানগরের দ্বিতীয় ইনিংসে তিনি কোনো উইকেট পাননি। এই ম্যাচের স্কোরকার্ড দেখার আগেই বিসিবির ভুলটি অন্যভাবে চোখে পড়তে পারে। ভিডিওটি ফুলস্ক্রিনে দেখলে ক্যাপশনে যে বোলারের নাম লেখা হয়েছে, তাঁর সঙ্গে ভিডিওতে বোলারের জার্সিতে যে নাম লেখা—তা মেলে না! বোলারের জার্সির পেছনে লেখা মেহদী। অর্থাৎ ৭ উইকেট নেওয়া পেসার মেহদী হাসান। এই বিভ্রান্তির পর ম্যাচের স্কোরকার্ড দেখে বিসিবি যে ভুল করেছে সে বিষয়ে পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যায়। ইউটিউবে লাইভ সম্প্রচারে আগের ওভারে বোলিং করা রবিউলের নামটি মেহদীর বোলিংয়ের সময়ও রয়ে গিয়েছিল। একটু পর অবশ্য সেটি ঠিক করা হয়।
অবশ্য বিসিবির কর্মের পরিধি বিবেচনা করলে এগুলো ছোটখাটো ভুল। এমন সব ছোটখাটো ভুলের হিসাব বের করতে গেলে হয়তো ‘ভুল বাছতে বোর্ডই উজার হয়ে যাবে!’ আর বড় বড় প্রতিষ্ঠানে এমন ছোটখাটো ভুল হতেই পারে—ভেবে নিয়ে আত্ম–সান্ত্বনা লাভের সংস্কৃতিও চালু আছে বাংলাদেশের ক্রিকেটে। তা ছাড়া এই টুর্নামেন্টটিও জাতীয় লিগের মতো খুব একটা নজরে না আসা এক সাধারণ আসর, যেখানে দর্শক আসা দূরে থাক, স্বয়ং বিসিবিই ভালো করে খেয়াল করে কি না সন্দেহ! কিন্তু তারপরও একটি প্রশ্ন থেকে যায়।
বিসিবির কর্তাব্যক্তিরা প্রায়ই বিভিন্ন সংবাদ সম্মেলনে ঘরোয়া লিগ থেকে প্রতিভা বাছাই করে তুলে আনার প্রতিশ্রুতি দেন কিংবা এ বিষয়ে গলার সুর বেশ চড়িয়েই বলেন। শুনতে বেশ ভালোই লাগে। বেশ আশা জাগে মনে। কিন্তু প্রতিভা তুলে আনার পথে খেলোয়াড়দের প্রতি মনোযোগ দেওয়ার এ যদি হয় উদাহরণ, তাহলে একটি বাংলা সিনেমার নামের আদলে বলতেই হয়, ‘বিসিবির মন বসে না ঘরোয়া ক্রিকেটের টেবিলে (পড়ুন মাঠে)!’ আর ত
previous post
Related posts
Click to comment